ভারতে আখ চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ আলোচনা করো – ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর। (sugarcane cultivation - Geography Questions and Answers)
ভারতে আখ চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ আলোচনা করো – ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর ।
প্রশ্নঃ ভারতে আখ চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ আলোচনা করো।
উত্তরঃ আখ হলো ভারতের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। ভারতে চিনি, গুড় ও বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে আখের অনেক ব্যবহার দেখা যায়। অন্যান্য ফসল চাষের মত ভারতে আখ চাষের জন্য কতগুলি অনুকূল ভৌগোলক পরিবেশের দরকার হয়। সেগুলি হল-
A) প্রাকৃতিক পরিবেশ:
অ)উষ্ণতা : আখ চাষের জন্য গড়ে 20°C-26°C উষ্ণতার দরকার হয়।
আ)বৃষ্টিপাত : বার্ষিক 150 সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয় আখ চাষের জন্য। তবে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 100 সেমি কম হলে জল সেচের প্রয়োজন বেড়ে যায়।
ই)সামুদ্রিক বাতাস : সামুদ্রিক লবণাক্ত বাতাসে আখ গাছের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
ঈ)তুষারপাত : তুষারপাত আখ গাছের ক্ষতি করে। যখন ধান পাকার সময় আছে তখন শুষ্ক ও রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়া আখ গাছের রস বৃদ্ধি করে।
২)মৃত্তিকা
: আখ চাষের জন্য চুন ও লবণ মিশ্রিত উর্বর দোঁয়াশ মৃত্তিকা বেশ ভালো।তবে কাদামাটিতে আখ চাষ ভালো হয় না জল নিকাশের অসুবিধা থাকায়।
৩) জমির প্রকৃতি : গাছের গোড়ায় জল জমলে আখ গাছের ক্ষতি হয়। তাই উত্তম জল নিকাশি ব্যবস্থা যুক্ত ঈষৎ ঢালু জমিতে আখ চাষ করলে খুব ভালো হয়।
B) অর্থনৈতিক পরিবেশ :
১) সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক : আখ গাছ রোপন, গাছের পরিচর্যা ও আখ কাটার জন্য প্রচুর সুলভ ও দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
২) সার প্রয়োগ : আখ জমিতে মাঝে মাঝে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ভালো হয় কারণ আখ চাষে জমির উর্বরতা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায|
৩) উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা : আখ হল ওজন হ্রাসশীল কাঁচামাল। আখ গাছকে দ্রুত চিনিকলে পাঠানোর জন্য উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা থাকা দরকার কারণ গাছের রস তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
৪) মূলধনের যোগান : জল সেচের ব্যবস্থা, সার ও কীটনাশক ক্রয়, শ্রমিকের মজুরি প্রদান অন্যান্য কাজের জন্য আখ চাষে পর্যাপ্ত মূলধনের প্রয়োজন হয়।
৫) চাহিদা : আখ চাষের জন্য চিনি ও গুড়ের নির্ভরযোগ্য বাজার থাকা প্রয়োজন। কারণ নির্ভরযোগ্য বাজার না থাকলে যেকোন অর্থকরী বাণিজ্যিক ফসল চাষের মতো আখ চাষও অর্থহীন হয়ে পড়ে।
Comments
Post a Comment